দীর্ঘদিন সৌন্দর্য ধরে রাখতে অ্যালোভেরার বিকল্প নেই
পৃথিবীতে সবাই সুন্দরের পূজারি। সমায়েরর সাথে সাথে মানুষের সৌন্দর্য কমতে থাকে। সবাই চায় তার সৌন্দর্য ধরে রাখতে। আর এই সৌন্দর্য ধরে রাখতে হলে ঘৃতকুমারি বা অ্যালোভেরার কোন বিকল্প নেই।
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধক ভেজষ। অ্যালোভেরার ব্যবহার যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে হার্টকে সুস্থ রাখে।
পোস্ট সূচিপত্র
- অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারি
- ত্বকে অ্যালোভেররা কার্যকারিতা
- অ্যালোভেরা দিয়ে মুখের কালো দাগ দূর করুন
- শুষ্ক ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা
- অ্যালোভেরার ফেসিয়াল
- অ্যালোভেরা দিয়ে ফেসপ্যাক
- অ্যালোভেরার ও মধুর ফেসপ্যাক
- অ্যালোভেরা ও হলুদের ফেসপ্যাক
- অ্যালোভেরা ও লেবুর ফেসপ্যাক
- অ্যালোভেরা ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
- অ্যালোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম
- অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- চুলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম
- অ্যালোভেরার জুস তৈরির নিয়ম
- অ্যালোভেরার জুস খাওয়ার উপকারিতা
- খালি পেটে অ্যালোভেরা খাওয়ার নিয়ম
- ত্বকের চুলকানি চিকিৎসায় অ্যালোভেরার ব্যবহার
- অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
- হার্ট সুস্থ রাখতে অ্যালোভেরার ব্যবহার
- মাংশপেশী ও হাটুর ব্যাথা নিরাময়ে অ্যালোভেরা
- দাাঁতের যত্নে অ্যালোভেরার ব্যবহার
- মুখের দূর্গন্ধ দূর করতে অ্যালোভেরা
- ওজন হ্রাস করতে অ্যালোভেরা
- হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা
- ডায়েবেটিস প্রতিরোধ করতে অ্যালোভেরা
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা
- মুখের ঘা সারাতে অ্যালোভেরা
- ক্যান্সার প্রতিরোধে অ্যালোভেরা
- রক্তচাপ কমাতে অ্যালোভেরা
- ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারনে অ্যালোভেরা
- ক্লান্তি দূর করতে অ্যালোভেরা
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারি
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারি দেখতে অনেকটা ক্যকটাস এর মতো । আবার এটা আনারসের পাতার মতো অনেকটা। এটি একটি বহুজীবী ঔষধি গাছ। লম্বা লম্বা সবুজ পাতা। পাতার দুধারে কাটাযুক্ত। ভেতরে রয়েছে জেলির ন্যায় থকথকে সাদা পদার্থ। অ্যালোভেরা সব ধরনের মাটিতে জন্মে তবে দোঁআশ মাটিতে ভালো জন্মে। অ্যালোভেরা ছাদে টাবের ভেতরেও চাষ করা যায় । তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন গোড়ায় পানি জমে না থাকে।
ত্বকে অ্যালোভেররা কার্যকারিতা
ত্বক ফর্সা কিংবা কালো তা নির্ভর করে ম্যালনিন নামক হরমনের উপর। ম্যালানিন হরমনের পরিমান বেশী থাকলে ত্বক কালো দেখায়। আর ম্যালানিন কম পরিমানে থাকলে ত্বক ফর্সা দেখায়। অ্যালোভেরাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিনারেল, খনিজ, অ্যামািইনো এসিড. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই রাসায়নিক উপাদান গুলো ত্বকে ম্যালানিনের পরিমান কমিয়ে দেয় যার ফলে ত্বক উ্জ্জল ও ফর্সা দেখায়।
অ্যালোভেরা দিয়ে মুখের কালো দাগ দূর করুন
ত্বকে বিভিন্ন কারনে কালো দাগ পড়ে। রৌদের পুড়ার কারনে, ব্রনের দাগ , হরমোন জনিত সম্যসার , অত্যধিক চিন্তা করা, বাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্যামিক্যাল যুক্ত ক্রিম, ফেসপ্যাক ইত্যাদি ব্যবহার করার কারনে। ত্বকের এই কালো দাগ মোটেও ভালো লাগে না। এই কলো দাগ দূর করার জন্য ্অ্যালোভেরার জেল এর সাথে সামান্য পরিমান চিনি ও লেবুর রস নিয়ে নিয়মিত ঘষতে হবে । ত্বকের কালো ডার্ক সার্কেল গুলো দূর হয়ে ত্বক মসৃন ও মোলায়েম হয়ে যাবে।
লেবুর রসে থাকে ভিটামিন সি থাকে। যা ত্বকের কালো দাগ ্উঠাতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের উজ্জলতা বাড়ে।
শুষ্ক ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা
শীতকালে বায়ুর আদ্রতা কম থাকার কারনে ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়। ত্ত্বক শুষ্কতার সাথে সাথে বাড়তে থাকে বলিরেখা। ত্বকের মসৃনতা বাড়ানোর জন্য অ্যালোভেরা খুবই কার্যকর। আ্যালোভোরা জেল, টক দই এবং মধু একসাথে মিশিয়ে পেস্টের মতো করে ফেসে লাগাতে হবে। তবে যদি ত্বকের তৈলাক্ত সমস্যা থাকে মধুর বদলে একটি লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে।
অ্যালোভেরা জেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বককে ময়শ্চায়জার করে শুষ্ক ত্বককে নরম ও মোলায়েম করে। টক দই ত্বকের ময়শ্চায়জার করে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে ফলে ত্বকের টানটান ভাব নিয়ে আসে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। লেবুর রসে থাকে সাইট্রিক এসিড যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বক যদি আর্দ্র থাকে তাহলে ত্বক নরম ও মোলায়েম হয়।
অ্যালোভেরার দিয়ে ফেসপ্যাক
উজ্জল ফর্সা ত্বক সবাই চায়। এই উজ্জল ত্বকের জন্য ঘন্টায় ঘন্টায় সময় নষ্ট করে পার্লারে। তার পরেও মনের মত ত্বক পাওয়া যায় না।এছাড়াও বাজারে ফর্সাকারী বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক পাওয়া যায়। যা ব্যবহারের ফলে ত্বক অল্পসময়ের জন্য উজ্জল দেখালে ও দীর্ঘসময়ের জন্য এটি ক্ষতির কারন হয়ে যায়। অথচ খুব অল্প সময়ে বাড়িতেই বানানো যায় প্রাকৃতিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া অ্যালোভেরার ফ্রেসপ্যাক।
অ্যালোভেরা দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। প্রতিটি ফেসপ্যাক ত্বকের জন্য কার্যকর। একদম ন্যাচারাল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন।
অ্যালোভেরার ও মধুর ফেসপ্যাক
অ্যালোভেরার উপরের খোসা ছড়িয়ে নিয়ে ভেতরের জেলি ২ টেবিল চামচ এবং ১ টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশেয়ে ভালোভাবে পেস্টের মতো করতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ ত্বকে মাখিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। অত:পর ধুয়ে ফেলুন। এবাভে কিছুদিন করতে থাকুন ফলাফল আপনি নিজেই দেখতে পাবেন।
অ্যালোভেরা ও হলুদের ফেসপ্যাক
লাবন্যময়ী উজ্জল ত্বক কে না চায়। ত্বকের যত্ন ঠিক মতো নিলে আপনেও পেতে পারেন লাবন্যময়ী ত্বক। হলুদ ও অ্যালোভেরা তৈরি ফেসপ্যাক আপনার ত্বককে উজ্জল করবে এবং ভেতর থেকে ডার্ক সাকেল গুলা বের করে ত্বকের মসৃনতা বাড়াবে। অ্যালোভেরা জেল ২চা চামচের সাথে ১চা চামচ হলুদের গুড়া মিশ্রিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে রাতে ঘুমানোর আগে ১৫-২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা ও লেবুর ফেসপ্যাক
অ্যালোভেরা ও লেবুর টোনিক ত্বকের জন্য খুবই কার্যকর। অ্যালোভেরাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খনিজ, ভিটামিন, ধাতব পদার্থ, অ্যামাইনো ও ফ্যাটি এসিড। আবার লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক এসিড । এই দুটি উপাদানের মিশ্রন ত্বককে রোদের পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে। ঠোঁটের কালো দাগ দূর করতে ও এই প্যাকটি খু্বই কার্যকর।
অ্যালোভেরা জেলের সাথে সামান্য ্একটু লেবুর রস মিশিয়ে ঠোঁটে আলতো ভাবে ঘষতে থাকুন। ঠোটের যে কালচে ভাবে তা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে এবং ঠোঁটে নরম ও মোলায়েম হবে। আর ত্বকের জন্য ২টেবিল চা চামচ অ্যালোভেরা জেলের সাথে ১টেবিল চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করে মুখে ম্যাসেজ করুন কিছু সময় এর পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন । ত্বকের গ্লো ফিরে আসবে।
অ্যালোভেরা ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
ত্বককে ঠান্ডা রাখতে এ্রই প্যকটি খুবই কার্যকর। ত্বককে ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি ত্বককে সফট ও উজ্জল করে। অ্যালোভেরাতে আছে ময়শ্চায়জার করার ক্ষমতা এবং গোলাপজলের মধ্যে রয়েছে হাইড্রেট করার ক্ষমতা। যার ফলে ত্বক হয়ে উঠে প্রাণবন্ত ও সতেজ। ১টেবিল চামচ অ্যলোভেরা জেলের সাথে ১টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ফেলুন ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন ।
অ্যালোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম
অ্যালোভেরার ব্যবহার শুরু হয়েছে প্রাচীনকালে থেকেই । আয়ুবের্দিক চিকিৎসায় অ্যালোভেরার গুনাগুন বর্ণনা রয়েছে। রুপচর্যায় অ্যালোভেরার বিকল্প নেই । প্রাকৃতিক জরিপুটি যেখানে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সারাদিন কর্মব্যস্তায় ত্বকে ময়লা, ডার্ক সার্কেল, সেল ডেমেজ ঘটে। এই ঘাটতি পূরনের জন্য দরকার একটা ক্রিম। বাজারে অনেক ক্রিম কিনতে পাওয়া যায় যা ক্রেমিক্যাল যুক্ত।
পি এইচি নিয়ন্ত্রিত নয় যা ত্বকের উপকারের পরিবর্তে পাশ্বপ্রতিক্রিয়াই বেশী দেখা যায়। বাড়িতে বসে ন্যাচারাল উপাদান অ্যালোভেরা দ্বার বানানো যেতে পারে নাইট ক্রিম যা ত্বক পরিষ্কার করার সাথে সাথে ত্বকের উজ্জলতা , কালো দাগ , ব্রনের দাগ ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ফর্সা হওয়া মানে সাদা ত্বক নয়। ত্বকের উজ্জলতাই হলো ত্বকের সৌন্দর্য। পরিবেশের ধুলাবালি ত্বকের লাগার ফলে ত্বকের লোমকূপ গুলো সংকুচিত হয়ে যায় তখন ত্বক উজ্জলতা হারায়। ত্বকের এই উজ্জলতা ফিরেয়ে নিয়ে আসতে পারে অ্যালোভেরার বহুমুখী ব্যবহার। প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের জেল্লা ফিরিয়ে নিয়ে এস ত্বককে করে মসৃন, মোলায়েম, লাবন্যময়ী।
চুলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম
ত্বক যেমন সৌন্দযের প্রতিক তেমনি চুল হলো ঐ সৌন্দয্য রক্ষা করার প্রতিক । ত্বক অনেক সুন্দর কিন্তু মাথার চুলে খুশকি বা চুল নেই তাহলে সব সৌন্দয্যই বৃথা। অ্যালোভেরা ত্বকের যত্নের সাথে সাথে চুলের যত্নেও সমান ভাবে ব্যবহার করা যায়। মসুরের ডাউল সারারাত ভিজিয়ে রেখে। সকালে ব্যাল্ডকরে তার সাথে অ্যালোভেররা জেল মিশেয়ে চুলে ব্যবহার করুন। এতে চুল খুশকিমুক্ত হবে চুলের মসৃণতা বাড়বে চুল পড়া কমে যাবে।
অ্যালোভেরার জুস তৈরির নিয়ম
অ্যালোভেরার রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বাড়িতে সহজেই বানিয়ে ফেলুন অ্যালোভেরার জুস।
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
- অ্যালোভেররা জেল
- পানি
- প্রয়োজন মতো মধু অথবা চিনি
- লেবুর রস
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা না থাকলে বরফের টুকরা
কার্যপ্রণালীঃ প্রথমে অ্যালোভেরার পাতা হতে অ্যালোভেররা জেলকে আলাদা করে একটি বাটিতে নেই। এরপর প্রয়োজন মতো পানি, মধু বা চিনি মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। অতপর গ্লাসে ঢেলে নিয়ে তাতে ১টেবিল চামচ লেবুর রস ও ২-৩টুকরা বরফ মিশালে তৈরি হয়ে যাবে অ্যালোভেরার জুস।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url